কৃষি প্রতিক্ষণ ডেস্কঃ খুলনার দাকোপে পানি উন্নয়ন বোর্ডের দুইটি পোল্ডারে বেড়িবাঁধ নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে। বিশ্ব ব্যাংকের অর্থায়নে চায়নার একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজটি পেয়েছে; কিন্তু মেগা বাজেটের ওই প্রকল্পে নদী শাসনের ব্যবস্থা না থাকায় এলাকাবাসী হতাশ হয়ে পড়েছে। ভাঙন প্রতিরোধ ব্যবস্থা ছাড়া বাঁধ নির্মাণ হলে সরকারের শত শত কোটি টাকার অপচয় ছাড়া বাস্তব ভিত্তিক কোনো কাজে আসবে না এমন অভিমত এলাকাবাসীর।
২০০৯ সালের ২৫ মে আইলার তাণ্ডবে উপজেলার দুইটি ইউনিয়নের বেড়িবাঁধ ভেঙে অর্ধলাখ মানুষ ২১ মাস পানিবন্দী থাকে। অবশেষে সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে বাঁধ নির্মাণ হলে এলাকার মানুষ পানিমুক্ত হয়। সেই থেকে উপজেলাবাসী ৬০-এর দশকে নির্মিত ওয়াপদা বাঁধ যুগোপযোগী নয় উল্লেখ করে ভাঙন প্রতিরোধ ও টেকসই বাঁধ নির্মাণের দাবিতে আন্দোলন করে আসছে। এমনকি উপজেলা জাতীয় পার্টি ২০১৪ সালে নিজ দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য পানি সম্পদ মন্ত্রী ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদকে দিয়ে ভাঙনকবলিত এলাকা পরিদর্শন করান। তারই ফলশ্রুতিতে সরকার উপকূলীয় অঞ্চলে টেকসই বাঁধ নির্মাণে মেগা প্রকল্প গ্রহণ করে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্র জানায়, খুলনাঞ্চলের বাগেরহাট জেলার রামপাল ও শরণখোলা উপজেলার দুইটি পোল্ডার এবং দাকোপ উপজেলার ৩২ ও ৩৩নং পোল্ডার নিয়ে বিশ্ব ব্যাংকের অর্থায়নে উপকূলীয় টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণে একটি প্যাকেজ প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। ওই প্রকল্পের আওতায় উপজেলার দুইটি পোল্ডারে সাড়ে ৩শ কোটি টাকা ব্যয়ে ১শ কি.মি বেড়িবাঁধ নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হয়। তিন বছরের মধ্যে কাজ শেষ করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে চায়নার দি ফাস্ট ইঞ্জিনিয়ারিং ব্যুরো নামে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান গত ২৬ জানুয়ারি কাজ শুরু করেছে। প্রকল্পের কাজ শুরু হলে এলাকাবাসীর মনে নতুন আশার সঞ্চার হয়; কিন্তু পরবর্তীতে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে- ওই প্রকল্পে কেবল বাঁধ নির্মাণ হবে, নদী শাসন অর্থাত্ ভাঙন প্রতিরোধে কোনো ব্যবস্থা থাকছে না। প্রথম দিকে নদী শাসন ব্যবস্থা রেখে কাজের ডিজাইনের কথা শোনা গেলেও পরবর্তীতে ডিজাইন পরিবর্তন করে বাঁধ নির্মাণকে প্রাধান্য দিয়ে প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। ফলে শত শত কোটি টাকা ব্যয়ে সরকার যে উদ্দেশ্য নিয়ে মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে যাচ্ছে তা কাজে আসবে না এমন মন্তব্য সচেতন মহলের। এখানে নদী শাসন ছাড়া বাঁধ নির্মাণ হলে দুই-এক বছরের মধ্যে সেটি আবার নদীগর্ভে চলে যাওয়ার আশঙ্কা করছে এলাকাবাসী। যে কারণে প্রকল্পে নদী শাসন ব্যবস্থা অন্তর্ভুক্তির দাবিতে প্রয়োজনে আন্দোলনে নামার উদ্যোগ নিচ্ছে এলাকাবাসী।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল হান্নান বলেন, পরিস্থিতি তুলে ধরে পর্যাপ্ত নদী শাসন ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য উপর মহলে প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।
সুত্রঃ ইত্তেফাক/ কৃপ্র/ এম ইসলাম