ড. ইয়াহিয়া মাহমুদঃ প্রাকৃতিক সম্পদ ও সৌন্দর্যে পরিপূর্ণ কাপ্তাই লেক দেশের অভ্যন্তরীণ উন্মুক্ত জলাশয়ের মধ্যে সর্ববৃহৎ এবং দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ায় কৃত্রিমভাবে তৈরি লেকগুলোর মধ্যে অন্যতম। জলবিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য ৬৮,৮০০ হেক্টর আয়তনের এ লেকটি মূলত তৈরি হলেও মৎস্য উৎপাদন, কৃষিজ উৎপাদন, জলপথে যাতায়াত, ফলজ ও বনজ দ্রব্য দুর্গম পথে পরিবহন, জেলে, ব্যবসায়ী ও স্থানীয় জনসাধারণের আর্থসামাজিক উন্নয়ন ও জীবন-জীবিকা থেকে শুরু করে মৎস্য সেক্টরে কাপ্তাই লেক গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে আসছে। বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট এ লেকের উৎপাদনশীলতা, মৎস্য প্রজাতি বিন্যাস, মৎস্য সম্পদ সংরক্ষণ এবং লেকে মৎস্য চাষের প্রযুক্তি উদ্ভাবনসহ বিভিন্ন বিষয়ের ওপর ৮০’র দশকের শেষার্ধ্ব থেকে গবেষণা পরিচালনা করে আসছে। গবেষণালব্ধ ফলাফল ও তথ্যাদির ভিত্তিতে কাপ্তাই লেকের মৎস্য জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ ও সহনশীল ব্যবস্থাপনা কৌশল সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত বর্ণনা নিচে দেয়া হলো।
কাপ্তাই লেক দেশীয় মৎস্য প্রজাতির এক বৈচিত্র্যময় ও সমৃদ্ধশীল জলভাণ্ডার। গবেষণার সর্বশেষ তথ্য মোতাবেক এ লেকে ২ প্রজাতির চিংড়ি, ১ প্রজাতির ডলফিন, ২ প্রজাতির কচ্ছপ ও ৭৮ প্রজাতির মিঠা পানির মাছ রয়েছে। এর মধ্যে ৬৮ প্রজাতির মাছ হচ্ছে দেশীয়, আর বাকি ১০টি বিদেশি।
লেকের মৎস্যকুলের প্রজাতি বিন্যাস বিগত চার দশকের ব্যবধানে অনেক পরিবর্তন হয়েছে। লেক সৃষ্টির ফলে আগের খরস্রোত নদীগুলোর পানি প্রবাহমান বৈশিষ্ট্য থেকে অনেকাংশে স্থির পানির বৈশিষ্ট্যে রূপান্তরিত হয়েছে। পানির এ বৈশিষ্ট্যগত পরিবর্তনের ফলে গোটা জলজ পরিবেশেরও পরিবর্তন হয়েছে। ফলশ্রুতিতে মৎস্যকুলের প্রজাতি বিন্যাসেও স্বাভাবিকভাবে এর প্রভাব পরিলক্ষিত হয়েছে।বিগত চার দশকে লেকের জলজ পরিবেশের পরিবর্তন, বিশেষ করে প্রধান প্রধান নদীগুলোর উপরের এলাকায় পলি জমে ভরাট হয়ে যাওয়া, কোন কোন এলাকায় পানি দূষণ, জলজ আগাছার প্রকোপ বৃদ্ধি, মৎস্যকুলের ওপর মনুষ্য সৃষ্ট চাপ ও প্রতিবন্ধকতা এবং সর্বোপরি ব্যবস্থাপনার বিভিন্ন পর্যায়ে অসম্পূর্ণতা এ লেকের মৎস্যকুলের প্রজাতি বিন্যাস ব্যাপকভাবে চলেছে। বর্তমানে ৪২টি প্রজাতির মাছ এ লেক থেকে বাণিজ্যিকভাবে আহরিত হচ্ছে । এদের মধ্যে চাপিলা, তেলাপিয়া, কেচকি, মলা, কাটা মইল্যা, বাটা, ফলি, আইড়, গজার, শোল ইত্যাদি অন্যতম। অবশিষ্টি প্রজাতিগুলোর বাণিজ্যিক গুরুত্ব না থাকলেও জীবতাত্ত্বিক গুণাগুণ ও অন্যান্য দিক বিবেচনায় লেকে সামগ্রিক মৎস্যকুলের অবস্থানে এদেরও ভূমিকা রয়েছে।
কাপ্তাই লেকের মৎস্য জীববৈচিত্র্য পরিবর্তনের ক্রমধারা
মনুষ্য সৃষ্ট চাপ এবং প্রবাহমান পানি থেকে স্থির পানিতে পরিবর্তনের কারণে কাপ্তাই লেক থেকে কিছু দেশীয় প্রজাতির মাছ যেমন বিলুপ্ত হয়ে গেছে, অন্যদিকে আবার কিছু বিদেশি প্রজাতির মাছ যেমন- সিলভার কার্প, গ্রাসকার্প, কার্পিও, রাজপুঁটি ও থাই পাঙ্গাশ বিগত দুই দশকে মজুদ করা হয়েছে। বিদেশি প্রজাতির মাছের মধ্যে আফ্রিকান মাগুর ও তেলাপিয়া দুর্ঘটনাক্রমে লেকে সংযোজিত হয়েছে (সারণি-১)। লেকে তেলাপিয়া এরই মধ্যে বেশ বিস্তার লাভ করেছে এবং বিগত কয়েক বছর ধরে বাণিজ্যিকভাবে আহরিত হচ্ছে।
মৎস্য প্রজাতিগুলোর গ্রুপভিত্তিক পরিবর্তনের ক্রমধারা
বিগত ৪ দশকে লেকের মৎস্য আহরণের বৃদ্ধি উৎসাহব্যঞ্জক। তবে আশংকাজনক দিকে হচ্ছে মূল্যবান রুই জাতীয় মাছের ক্রমাবনতি। ১৯৬৫-৬৬ সালে রুই, কাতল, মৃগেল, কালিবাউস ও মহাশোলসহ সামগ্রিকভাবে মেজর কার্প ছিল মোট মৎস্য অবতরণের প্রায় ৮১.৩৫%; যা ক্রমশ হ্রাস পেয়ে ২০০৪-০৫ সালে ৪% এর নিচে নেমে এসেছে। অন্যদিকে ছোট মাছ বিশেষ করে চাপিলা, কাচকি, মলা ইত্যাদির পরিমাণ ১৯৬৫-৬৬ সালের রেকর্ডকৃত ৩% থেকে বিগত ৪ দশকে বেড়ে বর্তমানে প্রায় ৯০% এর কাছাকাছি পৌঁছেছে যা উদ্বেগের বিষয়।
রাক্ষুসে প্রজাতির মাছের সামগ্রিকভাবে ব্যাপক কোনো পরিবর্তন না হলেও এদের মধ্যে কিছু মূল্যবান প্রজাতির বড় আকারের মাছ যেমন চিতল, বোয়াল, আইড়, গজার ইত্যাদি সস্প্রতি আগের মতো বড় আকারের পাওয়া যায় না। ছোট মাছের অস্বাভাবিক বৃদ্ধি ও রুই জাতীয় মাছের আশংকাজনক হ্রাস পাওয়ার বিষয়টি বিশেষভাবে বিবেচ্য। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে কম বৃষ্টিপাত, লেকের সঙ্গে সংযুক্ত নদীগুলোর নাব্যতা হ্রাস, লেকের পানির গভীরতা কমে যাওয়া এবং রুই জাতীয় মাছের প্রধান চারটি প্রজননস্থল (কাসালং চ্যানেল, মাইনিমুখ; বরকল চ্যানেল, জগন্নাথছড়ি; চেংগী চ্যানেল, নানিয়ারচর; রিংকং চ্যানেল, বিলাইছড়ি) নষ্ট হয়ে যাওয়া, নিষিদ্ধ জাল ব্যবহার, প্রজনন মৌসুমে পোনা মাছ ও মা মাছ নিধন, শুষ্ক মৌসুমে অধিক মাছ আহরণ ইত্যাদি কারণে লেকের জীববৈচিত্র্য হ্রাস পাচ্ছে।
কাপ্তাই লেকের হারানো অতীত ফিরে পেতে এবং লেককে বাণিজ্যিক গুরুত্বসম্পন্ন মাছে ভরপুর করতে এরই মধ্যে সরকার নানা স্থায়ী উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন। কাপ্তাই লেকের মাছকে সুরক্ষার জন্য মাছ আহরণ নিষিদ্ধকালীন সময়ে জেলেদের জন্য ডিজিএফ কার্ডের মাধ্যমে খাদ্য বিতরণ করা হচ্ছে। এটি একটি প্রশংসনীয় উদ্যোগ। তাছাড়া, লেকের সঙ্গে সম্পৃক্ত সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ের ব্যক্তিদের সম্মলিত উদ্যোগে কিভাবে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা যায় সে বিষয়ে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।
মৎস্য উৎপাদন বৃদ্ধি ও মৎস্য জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ
১. মৎস্য প্রজননক্ষেত্র সংরক্ষণ ও ব্যবস্থাপনা
রুই জাতীয় মাছের প্রজনন ক্ষেত্র ও প্রজনন অভিপ্রয়াণ (migratory) চ্যানেলগুলো এরই মধ্যে পলি ভরাট হয়েছে এবং কোথাও কোথাও প্রজননক্ষেত্র স্থানান্তরিত হয়েছে। লেকে রুই জাতীয় মাছের মজুদ বৃদ্ধি ও সংরক্ষণ করার জন্য প্রাকৃতিক প্রজননক্ষেত্রগুলো যেমন-কাসালং চ্যানেলে মাইনিমুখ এবং তদূর্ধ্ব এলাকা; কর্ণফুলী চ্যানেলে জগন্নাথছড়ি এবং তদূর্ধ্ব এলাকা; চেংগী চ্যানেলে নানিয়ারচর এবং তদূর্ধ্ব এলাকা এবং রিংকং চ্যানেলে বিলাইছড়ি এবং তদূর্ধ্ব এলাকা পুনঃখননের মাধ্যমে সংরক্ষণের পাশাপাশি লেকের অভয়াশ্রম ঘোষণা করে যথাযথ ব্যবস্থাপনার আওতায় আনতে হবে।
২. অভয়াশ্রম ব্যবস্থাপনার কার্যকারিতা
লেকের জীববৈচিত্র্য সুরক্ষার জন্য লেকের সাতটি গুরুত্বপূর্ণ অংশকে এরই মধ্যে অভয়াশ্রম হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। এলাকাগুলো হচ্ছে রাঙ্গামাটি ডিসি বাংলো সংলগ্ন লেক এলাকা, বিএফডিসি রাঙ্গামাটি সদর অফিস সংলগ্ন এলাকা, লংগদু উপজেলা কমপ্লেক্স এলাকা, ছয়কুড়ি বিল, নানিয়ারচর এলাকা, রাঙ্গামাটি রাজবন বিহার এলাকা, কাপ্তাই উপজেলার নৌবাহিনী ক্যাম্প সংলগ্ন এলাকা এবং বিলাইছড়ি রিংকং চ্যানেল সংলগ্ন লেক এলাকা। বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএফডিসি) বাংলদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের গবেষণা ফলাফলের ওপর ভিত্তি করে ওই স্থানগুলোতে অভয়াশ্রম প্রতিষ্ঠা করে মাছকে নির্বিঘ্নে প্রাকৃতিক প্রজনন নিশ্চিত করার মাধ্যমে জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণের প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, কাপ্তাই হ্রদে রুই জাতীয় মাছের প্রধান প্রাকৃতিক প্রজনন ক্ষেত্র রয়েছে ৪টি। এছাড়া, ঝর্ণা ও ছড়ার মুখে রুই জাতীয় ছোট মাছের (Major Carps) প্রজনন হয়ে থাকে এ ধরনের প্রজনন ক্ষেত্র রয়েছে আরও প্রায় ৩৪৬টি। হ্রদের জলায়তন প্রায় ৭০০ বর্গ কিমি.। সংখ্যা ও আয়তন উভয় বিবেচনাই অভয়াশ্রম অপ্রতুল। অভয়াশ্রমের সংখ্যা ও আয়তন বৃদ্ধির পাশাপাশি সারা বছর পানির থাকে এমন স্থানে অভয়াশ্রম ঘোষণা ও যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা প্রয়োজন। এতে করে গুরুত্বপূর্ণ মৎস্য প্রজাতির উৎপাদন বৃদ্ধির পাশাপাশি জীববৈচিত্র্যও বৃদ্ধি পাবে।
৩. পাহাড়ি ঘোনায় নার্সারি স্থাপন ও ব্যবস্থাপনা
গবেষণায় দেখা গেছে যে, লেকে পোনা অবমুক্তির চেয়ে লেকের বিভিন্ন ঘোনায়-ক্রিকে নার্সারি স্থাপন করে কম সময়ে কম খরচে বেশি পোনা উৎপাদন করা যায় এবং অবমুক্তিজনিত মৃত্যু হার অনেক কম হয়। তাছাড়া, এ পদ্ধতিতে উৎপন্ন পোনা বর্ষার পানিতে-পাহাড়ি ঢলে প্লাবিত হয়ে স্বাভাবিকভাবে লেকে ছড়িয়ে পড়বে। ইনস্টিটিউটের রাঙ্গামাটির নদী উপকেন্দ্র থেকে কাপ্তাই লেকের পাহাড়ি ঘোনায় মাছের নার্সারি স্থাপন ও ব্যবস্থাপনা কৌশল এরই মধ্যেউদ্ভাবন করেছে। ফলে পাহাড়ি এলাকায় কার্প জাতীয় মাছের রেণু পোনা থেকে ৬০ দিনে গুণগতমানসম্পন্ন আঙ্গুলি পোনার প্রাপ্যতা নিশ্চিত হয়েছে। ইনস্টিউটের উদ্ভাবিত এ প্রযুক্তি সম্প্রসারণের ফলে পাহাড়ি এলাকায় রুই জাতীয় মাছের নার্সারি ব্যবস্থাপনায় নতুন সম্ভবানার দ্বার উন্মোচিত হয়েছে।
৪. বড় পোনা মজুদ ও ব্যবস্থাপনা
সহনশীল মৎস্য আহরণ অব্যাহত রাখার নিমিত্ত প্রতি বছর লেক থেকে যে পরিমাণ মাছ ধরা হয়ে থাকে তা পূরণের লক্ষ্যে প্রতি মৌসুমে বাণিজ্যিক গুরুত্বসম্পন্ন প্রজাতিগুলোর বিশেষ করে রুই জাতীয় মাছের ছোট-বড় বিভিন্ন সাইজের পোনা মজুদ করা হয়। পোনা মজুদ কর্মসূচি আরও কার্যকর করার লক্ষ্যে বাংলদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের সুপারিশ মোতাবেক কমপক্ষে ২৫% পোনা প্রাকৃতিক প্রজননের (হালদা বা যমুনা নদীর) পোনা হতে হবে। তাছাড়া, বিএফডিসির নিজস্ব পোনা উৎপাদন কার্যক্রম পুনরায় চালু করতে হবে এবং লেকের পরিবেশের সঙ্গে খাপ খাওয়াতে পারে এমন সুস্থ, সবল ও নির্ধারিত আকারে বড় পোনা (৯ সেমি. থেকে ১৫ সেমি. সাইজের) মজুদ করতে হবে।
৫. ক্ষতিকর মৎস্য শিকার প্রতিরোধ ব্যবস্থাপনা
সাম্প্রতিক তথ্য থেকে জানা যায় যে, লেকের মোট আহরিত মাছের প্রায় ২৬% আসে জাঁক থেকে। জাঁকে আকার ও প্রজাতি নির্বিশেষে প্রায় সব ধরনের মাছ ধরা পড়ে। ফলে পোনা মাছ বিশেষ করে রুই জাতীয় মাছের পোনা নিধন হয়ে থাকে। অন্যদিকে জাঁকের মাছ সাধারণত শুষ্ক মৌসুমে আহরণ করা হয় বিধায় সর্বশেষ আশ্রয়স্থল মনে করে জাঁকের ভেতরে গিয়ে একত্রিত হয়ে থাকা ডিমওয়ালা মাছও ব্যাপক হারে নিধন হয়ে থাকে। গবেষণার এসব বিষয় উদ্ঘাটিত হওয়ার পর প্রদত্ত সুপারিশ মোতাবেক হ্রদে জাঁক পদ্ধতিতে মৎস্য শিকার নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। কিন্তু আইন বা বিধিনিষেধ উপেক্ষা করে জাঁকের মাধ্যমে মাছ ধরার একটি প্রবণতা কোন কোন জাঁক মালিকদের মধ্যে লক্ষ করা যাচ্ছে। কাপ্তাই লেকে সহনশীল মৎস্য ব্যবস্থাপনার লক্ষ্যে জাঁক পদ্ধতিতে মৎস্য শিকার প্রতিরোধকল্পে গণসচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে।
৬. লেকে মৎস্য চাষ
লেকের বর্তমান মৎস্য উৎপাদন মূলত গতানুগতিক আহরণভিত্তিক ব্যবস্থাপনা নির্ভর, চাষ নির্ভর নয়। লেকের বর্তমান মৎস্য উৎপাদন আরও বৃদ্ধির নিমিত্ত বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট চাষ পদ্ধতি উদ্ভাবন সম্পর্কীয় গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। কাপ্তাই লেকে মৎস্য উৎপাদন বৃদ্ধি, সংরক্ষণ ও ব্যবস্থাপনা জোরদারকরণ (বিএফআরআই অংশ) শীর্ষক একটি উন্নয়ন প্রকল্পের অর্থায়নে বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট হতে লেকে খাঁচায় মনোসেক্স তেলাপিয়া ও থাই কৈ চাষের প্রযুক্তি উদ্বাবন করেছে। ফলে লেকে মাছ ধরা বন্ধকালীন ওই চাষাবাদ পদ্ধতি ব্যবহারের মাধ্যমে জেলেদের বিকল্প কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে।
৭. গবেষণা জোরদারকরণ
বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের রাঙ্গামাটির নদী উপকেন্দ্রটি আশির দশকে স্থাপিত হলেও উপকেন্দ্রে গবেষণাগার ও প্রয়োজনীয় যন্ত্রাপাতির অভাব ছিল। সম্প্রতি একটি উন্নয়ন প্রকল্পের মাধ্যমে উপকেন্দ্রের অফিস-কাম-গবেষণাগার নির্মাণসহ গবেষণার সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধি করা হয়েছে। ফলে গবেষণা কার্যক্রম আরও জোরদার করা সম্ভব হয়েছে। এতে গবেষণালব্ধ ফলাফল ব্যবহারের মাধ্যমে কাপ্তাই লেককে মৎস্য ভাণ্ডারে রূপন্তরিত করা সম্ভব হবে। উল্লেখ্য, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের মাননীয় মন্ত্রী সম্প্রতি ওই গবেষণা উপকেন্দ্র পরিদর্শন করেছেন এবং চাহিদার নিরীখে গবেষণা পরিচালানা করার জন্য গবেষকদের প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদান করেছেন।