কৃষি প্রতিক্ষণ ডেস্কঃ আন্তর্জাতিক বাজারে সুন্দরবনের শিলা কাঁকড়ার চাহিদা বাড়ছে। চাহিদা বাড়ায় বাগেরহাটে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে আধুনিক পদ্ধতিতে কাঁকড়ার চাষ। সাদা সোনা হিসেবে পরিচিত চিংড়ির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে রপ্তানির তালিকায় ধীরে ধীরে জায়গা করে নিচ্ছে সুন্দরবন এলাকার জলজ প্রাণী শিলা কাঁকড়া।
লাভজনক ও মৃত্যুর ঝুঁকি না থাকায় কাঁকড়া চাষের দিকে ঝুঁকে পড়ছেন চিংড়ি চাষিরা। সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় প্রদর্শনী কাঁকড়া খামার স্থাপন হওয়ায় অনেক চাষি চিংড়ি চাষ ছেড়ে শিলা কাঁকড়া চাষে ঝুঁকছেন। এ অবস্থায় মত্স্য বিভাগ কাঁকড়া প্রদর্শনী খামারগুলোতে খাঁচায়, প্যান ও খামারে তিন ধরনের কাঁকড়া চাষে কারিগরি সহায়তা প্রদান করছে।
বাগেরহাটের রামপাল, মংলা ও সদর উপজেলার বিভিন্ন এলাকার চাষিরা প্রশিক্ষণ নিয়ে লাভজনক এই শিলা কাঁকড়া চাষে এগিয়ে আসছেন। প্রতি বছরই কয়েক শত হেক্টর চিংড়ি খামার এখন শিলা কাঁকড়া খামারে রূপ লাভ করেছে। রামপাল উপজেলার হুড়কা গ্রামের কাঁকড়া চাষি পবিত্র পাড়ে ও দ্বীপংকর বলেন, কয়েক বছর ধরে চিংড়িতে মড়ক ও ভাইরাস লাগায় আমাদের মতো অনেক চিংড়ি ঘের মালিক চাষে আগ্রহ হারিয়ে ফেলেন। তবে শিলা কাঁকড়া চাষে এ ধরনের ঝুঁকি না থাকায় ও অধিক লাভজনক হওয়ায় চাষিরা শিলা কাঁকড়া চাষে এগিয়ে আসছেন।
বাগেরহাটের রামপালের হুড়কা, রামপাল সদরসহ কয়েকটি ইউনিয়নে এর চাষ হচ্ছে। বাগেরহাট সদর উপজেলার কাঁকড়া চাষি চয়ন বিশ্বাস বলেন, আমরা উপজেলা মত্স্য অফিস থেকে আধুনিক পদ্ধতিতে কাঁকড়া চাষের প্রশক্ষিণ নিয়ে লাভবান হয়েছি। মাত্র ৫২ শতক জমিতে কাঁকড়া চাষ করে তিনগুণ বেশি মুনাফা পেয়েছি। বিশেষ করে খাঁচায় কাঁকড়া চাষ ও মোটাতাজাকরণ বেশি লাভজনক বলে জানান চাষিরা। রামপাল উপজেলা মত্স্য কর্মকর্তা জয়দেব পাল জানান, আন্তর্জাতিক বাজারে চাহিদা তুঙ্গে থাকা শিলা কাঁকড়া চাষের জন্য বাগেরহাটের মাটি ও পানি খুবই উপযোগী। এরই প্রেক্ষাপটে মত্স্য অধিদফতরের উদ্যোগে কাঁকড়া ও কুচিয়া মোটাতাজাকরণ চাষ প্রকল্পের আওতায় বাগেরহাট জেলার বিভিন্ন উপজেলায় প্রদর্শনী খামার স্থাপনের পর শুধু রামপাল উপজেলায় এক বছরের ব্যবধানে বর্তমানে চাষির সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় ৯০০।
মত্স্য বিভাগ কাঁকড়া খামার প্রস্তুতি থেকে শুরু করে নানা ধরনের সহযোগিতা দিয়ে চাষিদের শিলা কাঁকড়া চাষে উদ্বুদ্ধ করছে। গত অর্থবছরে একমাত্র রামপাল উপজেলায় সাড়ে ৮০০ মেট্রিক টন কাঁকড়া উৎপাদন হয়েছে। তবে চলতি অর্থবছরে এই উৎপাদন বেড়ে আড়াই হাজার মেট্রিক টন ছাড়িয়ে যাবে বলে আশা করা যাচ্ছে।
সুত্র/ বাংলাদেশ প্রতিদিন/ কৃপ্র/এম ইসলাম