কৃষি প্রতিক্ষণ ডেস্কঃ নওগাঁ, জেলার মান্দা উপজেলায় জিঙ্ক সমৃদ্ধ ব্রি-৬২ জাতের ধান উৎপাদনে কৃষকরা আগ্রহী হয়ে উঠেছেন। অতি অল্প সময়ের মধ্যে কৃষকরা এই ধান কেটে ঘরে তুলে একই জমিতে অন্য ফসল চাষ করে লাভবান হওয়ার আশায় ব্রি-৬২ জাতের ধান চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন। নওগাঁ জেলার মান্দা উপজেলায় গত ৩ বছর ধরে জিঙ্ক সমৃদ্ধ ব্রি-৬২ জাতের ধান চাষ শুরু হয়েছে। প্রতি বছর এই জাতের ধানের চাষ বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ বছর আমন মৌসুমে উপজেলায় ১৬৭টি প্রদর্শনী প্লটে এই জাতের ধান চাষ হয়েছে।
হারভেষ্ট বাংলাদেশ-এর সহযোগিতায় বেসরকারি উন্নয়ন সংগঠন সিসিডিবি কৃষকদের এই ধান চাষে উৎসাহিত করে আসছে। কৃষকদের মধ্যে বিনামূল্যে বীজ বিতরণসহ বিভিন্ন পরামর্শ প্রদান এই সংগঠনের নিয়মিত কার্যক্রম। চলতি আমন মৌসুমে ৫শ’ জন কৃষকের প্রত্যেককে বিনামূল্যে ৩ কেজি করে বীজ বিতরণ করা করেছে। তারা এ বছর প্রায় ৫শ’ বিঘারও বেশি জমিতে এই ব্রি-৬২ জাতের ধান চাষ হয়েছে।
উপজেলার চক উমেদ গ্রামের কৃষাণী বিমলা প্রামানিক এবং সুনীল চন্দ্র মন্ডল তাদের জমিতে এই জাতের ধান চাষ করেছেন। তারা জানিয়েছেন, এই ধান চাষে বেশি পানির প্রয়োজন হয় না। ফলে সেচ খরচ অনেকটাই কম পড়ে। উৎপাদনও ভালো হয়। প্রতি বিঘা জমিতে ২২ থেকে ২৪ মণ পর্যন্ত ধান উৎপাদিত হয়। এ ছাড়াও এটি পুষ্টিমান সম্পন্ন। এই জাতের ধানে জিঙ্ক রয়েছে। একদিকে মানুষের শরীরের বিশেষ করে নারী ও শিশুদের শরীরে জিঙ্কের চাহিদা পূরণ করে। ফলে তাদের স্বাস্থ্য ভালো থাকে। অন্যদিকে মাত্র ১শ’ দিনে এই ধান কৃষকরা ঘরে তুলতে পারেন। এতে ধান কেটে সহজেই ঐ জমিতে আবার আলু বা সরিষা চাষ করতে পারেন। ফলে কৃষকরা বেশি লাভবান হয়ে থাকেন।
মান্দা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. জাহাঙ্গীর আলম প্রামানিক বলেছেন, এই ধান অতি অল্প সময়ের মধ্যেই কর্তন করা যায়। ফলে সাথে সাথে একই জমিতে আলু কিংবা সরিষা চাষ সম্ভব হয়। এ ছাড়াও নারী এবং শিশুদের শরীরের জন্য প্রয়োজন বিশেষ পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ এই ধান উৎপাদনে কৃষকদের উৎসাহিত করতে কৃষি বিভাগেরও রয়েছে বিশেষ ভূমিকা। ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার চাহিদা পূরণে ফসলের বহুমুখীকরণ কার্যক্রমের ধারাবহিকতায় একদিকে নতুন নতুন জাতের ধান উদ্ভাবন এবং তা থেকে মানুষের সুস্বাস্থ্য সুরক্ষায় জিঙ্ক সমৃদ্ধ এই ব্রি-৬২ জাতের ধান গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে সচেতন মহলের প্রত্যাশা।
সুত্রঃ বাসস/ কৃপ্র/ এম ইসলাম