কৃষি প্রতিক্ষণ ডেস্কঃ আগামী ৭ নভেম্বর থেকে মরক্কোর মারাকাশে অনুষ্ঠিত হবে জাতিসংঘের ২২তম শীর্ষ জলবায়ু সম্মেলন। ১২দিন ব্যাপী চলা এ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, পরিবেশ ও বন মন্ত্রী আনোয়ার হোসেন মঞ্জুসহ বাংলাদেশ থেকে একটি প্রতিনিধিদল যোগদান করবেন। এ উপলক্ষ্যে বুধবার পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ে আয়োজিত এক সাংবাদিক সম্মেলনে কপ-২২ তে বাংলাদেশের অবস্থান কী হবে তা তুলে ধরা হয়।
এতে আনোয়ার হোসেন মঞ্জু বলেন, বাংলাদেশ এখন দোষারোপের খেলায় (ব্লেম গেম) বিশ্বাস করে না। পরিবেশ দূষনের জন্য সব দেশই কমবেশি দায়ী। এজন্য সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে এ সমস্যার সমাধান করতে হবে। তিনি বলেন, প্যারিসে অনুষ্ঠিত জলবায়ু শীর্ষ সম্মেলনে সবদেশ একটি চুক্তির বিষয়ে একমত হয়েছে। যে কারণে দূষণ কমানোর ব্যাপারে সবদেশ একটি চুক্তিতে উপনীত হতে পেরেছে। উন্নয়নশীল দেশ চীন এবং ভারত এ চুক্তির বিরোধিতা করবে বলে আশংকা থাকলেও শেষ পর্যন্ত তারাও একমত হয়েছে।
আনোয়ার হোসেন মঞ্জু আরো বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাব মোকাবেলার জন্য বাংলাদেশ বিশ্বব্যাপী প্রশংসিত হয়েছে। এ লক্ষ্যে যে জাতীয় কমিটি সেটিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজেই নেতৃত্ব দিচ্ছেন। তিনি বলেন, তৃতীয় বিশ্বের দেশ হিসেবে জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের আগে যে দৃষ্টিভঙ্গি ছিলো সেটির পরিবর্তন হয়েছে। কাউকে দোষারোপ না করে সম্মিলিতভাবে এ সমস্যা মোকাবেলার ওপর আমরা জোর দিচ্ছি। মন্ত্রণালয়ে এখন নতুন নতুন প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। সবাইকে মনে রাখতে হবে পৃথিবীর তাপমাত্রা বাড়লে শুধু বাংলাদেশের একাংশ তলিয়ে যাবে না, পৃথিবীর অনেক দেশই তলিয়ে যাবে। তিনি বলেন, ইতিমধ্যে জলবায়ু পরিবর্তন খাতে অর্থ আসতে শুরু করেছে। প্রতিষ্ঠানগুলোর দক্ষতা উন্নয়নে দাতার এর আগে বাংলাদেশকে সহায়তা দিয়ে আসছে।
পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী আবদুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকব বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের বিষয়টি বাংলাদেশ খুব গুরুত্বের সঙ্গে নিয়েছে। যে কারণে মারাকাশ শীর্ষ জলবায়ু সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেক হাসিনা যোগ দিচ্ছেন। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবেলা করে একটি সুখী সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রী মারাকাশে ভূমিকা রাখবেন বলে জানান তিনি।
পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. কামাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, মারাকাশ সম্মেলনে ৭ থেকে ১৪ নভেম্বর টেকনিক্যাল নেগোসিয়েশন হবে। ১৫ থেকে ১৭ নভেম্বর অনুষ্ঠিত হবে হাই লেভেল সেগমেন্ট। তিনি বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে বাংলাদেশ প্যারিস চুক্তি অনুমোদন করেছে। এবারের সম্মেলনের প্রধান লক্ষ্য হবে প্যারিস জলবায়ু চুক্তির বাস্তবায়নে কর্মকৌশল নির্ধারণ করা। বাংলাদেশ ইতিমধ্যে সে প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে।
উল্লেখ্য, প্যারিস জলবায়ু চুক্তিতে বৈশ্বিক গড় তাপমাত্রা ২ ডিগ্রী সেলসিয়াসের মধ্যে রাখার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে এবং দেড় ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে রাখার প্রচেষ্টার কথা বলা হয়েছে। সাংবাদিক সম্মেলনে পরিবেশ অধিদফতরের মহাপরিচালক রইছ উল আলম মণ্ডলসহ মন্ত্রণালয়ের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সুত্রঃ ইত্তেফাক/ কৃপ্র/ এম ইসলাম