কৃষি প্রতিক্ষণ ডেস্কঃ আজ ২৬ শে রজব মহা-পবিত্র লাইলাতুল মেরাজ। যথাযোগ্য ধর্মীয় মর্যাদা ও ভাবগাম্ভীর্য পরিবেশে সোমবার দিবাগত রাতে সারাদেশে পবিত্র লাইলাতুল মেরাজ উদযাপিত হবে। এ উপলক্ষে ইসলামিক ফাউন্ডেশন আগামীকাল সন্ধ্যা ৬ টা ৪৫ মিনিটে (বাদ মাগরিব) বায়তুল মুকাররম জাতীয় মসজিদে ওয়াজ ও মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করেছে। ওয়াজ করবেন ঢাকার নারিন্দাস্থ দারুল উলুম আহছানিয়া কামিল মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল হযরত মাওলানা আবু জাফর মুহাম্মদ হেলাল উদ্দিন এবং বায়তুল মুকাররম জাতীয় মসজিদের সিনিয়র পেশ ইমাম হাফেজ মাওলানা মুহাম্মদ মিজানুর রহমান। সভাপতিত্ব করবেন ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক সামীম মোহাম্মদ আফজাল।
মেরাজ শব্দের অর্থ ঊর্ধ্বগমন। ইসলামের পরিভাষায় মেরাজ হলো, মহানবী হজরত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কর্তৃক সশরীরে সজ্ঞানে জাগ্রত অবস্থায় হজরত জিবরাইল (আ.) ও হজরত মিকাইলের (আ.) সঙ্গে বিশেষ বাহন বোরাকের মাধ্যমে মসজিদুল হারাম থেকে মসজিদুল আকসা হয়ে প্রথম আসমান থেকে একে একে সপ্তম আসমান এবং সিদরাতুল মুনতাহা পর্যন্ত এবং সেখান থেকে একাকী রফরফ বাহনে আরশে আজিম পর্যন্ত ভ্রমণ; মহান রাব্বুল আলামিনের সঙ্গে সাক্ষাৎ লাভ ও জান্নাত-জাহান্নাম পরিদর্শন করে ফিরে আসা।
মেরাজের একটা অংশ হলো ইসরা। ইসরা অর্থ রাত্রিকালীন ভ্রমণ। যেহেতু নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের মেরাজ রাত্রিকালে হয়েছিল, তাই এটিকে ইসরা বলা হয়। বিশেষত বায়তুল্লাহ শরিফ থেকে বায়তুল মুকাদ্দাস পর্যন্ত সফরকে ইসরা বলা হয়ে থাকে। কোরআনে আল্লাহ তাআলা বলেন: ‘তিনি পবিত্র (আল্লাহ) যিনি তাঁর বান্দাকে রাত্রিভ্রমণ করিয়েছেন মসজিদুল হারাম থেকে মসজিদুল আকসা পর্যন্ত। যার আশপাশ আমি বরকতময় করেছি। যাতে আমি তাকে আমার নিদর্শনসমূহ দেখাতে পারি। নিশ্চয় তিনিই সর্বশ্রোতা, সর্বদ্রষ্টা।’ (সুরা-১৭ [৫০] ইসরা-বনি ইসরাইল, রুকু: ১, আয়াত: ১, পারা: ১৫, পৃষ্ঠা ২৮৩/১)।
মেরাজ সংঘটিত হয়েছিল নবুওয়াতের ১১তম বছরের ২৭ রজবে। তখন নবীজির বয়স ৫১ বছর। মেরাজ হয়েছিল সশরীরে জাগ্রত অবস্থায়। এর প্রকৃষ্ট প্রমাণ হলো কাফের, মুশরিক ও মুনাফিকদের অস্বীকৃতি ও অবিশ্বাস। যদি আধ্যাত্মিক বা রুহানিভাবে অথবা স্বপ্নযোগে হওয়ার কথা বলা হতো, তাহলে তাদের অবিশ্বাস করার কোনো কারণ ছিল না। মেরাজের বিবরণ পবিত্র কোরআনের সুরা নাজমে সুরা ইসরায় বিবৃত হয়েছে। হাদিস শরিফ, বুখারি শরিফ, মুসলিম শরিফ, সিহাহ সিত্তাসহ অন্যান্য কিতাবে এই ইসরা ও মেরাজের বিষয়টি নির্ভরযোগ্য বিশুদ্ধ সূত্রে বিস্তারিত বর্ণিত হয়েছে।
আল্লাহ তাআলা বলেন: ‘শপথ নক্ষত্রের যখন তা বিলীন হয়। তোমাদের সাথি (মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বিপথগামী হননি এবং বিভ্রান্ত হননি। আর তিনি নিজে থেকে কোনো কথা বলেন না। (বরং তিনি যা বলেন) তা প্রদত্ত ওহি (ভিন্ন অন্য কিছু) নয়। তাকে শিখিয়েছেন মহাশক্তিধর (জিবরাইল আ.)। সে (জিবরাইল আ.) পাখাবিশিষ্ট, সে স্থিত হয়েছে দূর ঊর্ধ্বে। অতঃপর নিকটবর্তী হলো, পরে নির্দেশ করল। তারপর হলো দুই ধনুকের প্রান্তবর্তী বা আরও নিকট। পুনরায় তিনি ওহি করলেন তাঁর বান্দার প্রতি যা তিনি ওহি করেছেন। ভুল করেনি অন্তর যা দেখেছে। তোমরা কি সন্দেহ করছ তাকে, যা তিনি দেখেছেন সে বিষয়ে। আর অবশ্যই দেখেছেন তিনি তাকে দ্বিতীয় অবতরণ স্থলে; সিদরাতুল মুনতাহার কাছে; তার নিকটেই জান্নাতুল মাওয়া। যখন ঢেকে গেল সিদরা যা ঢেকেছে; না দৃষ্টিভ্রম হয়েছে আর না তিনি বিভ্রান্ত হয়েছেন; অবশ্যই তিনি দেখেছেন তাঁর রবের বড় বড় নিদর্শনসমূহ।’ (সুরা-৫৩ [২৩] নাজম, রুকু: ১, আয়াত: ১-১৮, পারা: ২৭, পৃষ্ঠা ৫২৭/৫)।
কৃপ্র/এম ইসলাম