মোঃ আরিফুর রহমান ।।
মাধবীলতার রয়েছে অনেক নাম, যেমন মণ্ডপ, কামী, পুষ্পেন্দ্র, অভীষ্টগন্ধক, অতিমুক্ত, বিমুক্ত, কামুক ও ভ্রমরোৎসব। মাধবী বৃক্ষারোহী লতা এবং দীর্ঘজীবী। ডাল ছোট ছোট এবং ঝোপঝাড় হয়ে যায়। এভাবে বহুবর্ষী হলে ধীরে ধীরে মূল লতাটি বেশ মোটা হয়ে যায়। ডাল দু’ তিন বছর পরপর কেটে দিতে হয়, তারপর লতা যতই বাড়তে থাকে ততই নতুন নতুন ডালপালা গজায় ফুল বেশি ফোটে। মাধবী অযত্নেও বাড়ে, বীজ থেকে চারা হয়, ডাল কেটে মাটিতে পুঁতে রাখলেও চারা পাওয়া যায়।
বাড়ির সৌন্দর্য বৃদ্ধিতে মাধবীলতা অতুলনীয়।বিশেষ করে বাড়ির প্রবেশ দ্বার, ছাদ, ফুল বাগানে, এ ফুলগাছ দেখা যায়। লাল সাদা ফুলের মাধবীলতাকে অনেকে পুষ্পন্দ্রে কামী, অভীষ্টগন্ধক, অতিমুক্ত, বিমুক্ত, কামুক ও ভ্রমরোৎসব নামে ডাকে। মানিকগঞ্জের মানুষ এ ফুলকে মাধবীলতা নামেই জানে।
মাধবীলতা অনেক দিন বাঁচে এবং ফুল দেয়। গাছের ডাল মোটা কাঠ লালচে ও শক্ত হয়। মাধবীলতা সাধারণত ৪ থেকে ৬ ইঞ্চি লম্বা হয়। দেখতে অনেকটা চাঁপা ফুলের পাতার মতো। সাধারণত গ্রামে অযত্নে জন্মে। তবে দিন দিন এই লতা গাছটির সংখ্যা কমে আসছে। সচরাচর খুব বেশি দেখা যায় না।
মাধবী ফুল সাদা রঙের, পাঁচটি পাঁপড়ি এবং তার মধ্যে পঞ্চম পাঁপড়ির গোড়ার দিক হলুদভাব। মাধবীলতা দেখতে তিল ফুলের মতো এবং বেশ সুগন্ধি। বসন্ত ও গ্রীষ্ম এই ফুলের ঋতু হলেও কখনো কখনো বর্ষা পর্যন্ত ফোটে। তবে প্রায় সারাবছরই এ ফুল দেখা যায়। এর ফুল থেকে ফল হয়। বীজ থাকে ২/৩টি।
এ ফুল দেখতে যেমন সুন্দর তেমনি তীব্র মিষ্টি ঘ্রাণে চারপাশ ভরিয়ে রাখে। ডালের আগায় বড় বড় ঝুলন্ত ফুলের থোকা। প্রতিটি থোকায় ১০ থেকে ১৫টি লাল সাদা ফুল।
মাধবীলতার রয়েছে ঔষধি গুনে পাতার রস পুরাতন বাতের ব্যথা সারতে বেশ উপকারী। মাধবীলতার পাতার রস, হাঁপানির শ্বাসকষ্টের জন্য পাতা ও ডালের রস উপকারী। মাধবীলতা গাছের শুকনো ছালের গুঁড়ো বিষাক্ত ঘা সারিয়ে তোলে।
মাধবী লতা দুর্লভ। উপকারীতার পাশাপাশি এর সৌন্দর্য মানুষের মনকে প্রফুল্ল করে তোলে। আজ মাধবীলতা হারিয়ে যাচ্ছে আমাদের অনাদর আর অবহেলায়।
কৃপ্র/এম ইসলাম