কৃষি প্রতিক্ষণ ডেস্কঃ জয়পুরহাট জেলা আলু উৎপাদনে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম জেলা। জয়পুরহাটে এবারও আলুর বাম্পার ফলন হয়েছে। আলু তোলার ভরা মৌসুম শুরু না হলেও আগাম জাতের আলুতে ইতোমধ্যে বাজার সয়লাব হয়ে উঠেছে। ক্ষেতে আলু ভাল রাখতে প্রতিষেধক হিসেবে ছত্রাকনাশক প্রয়োগ করছেন আলু চাষিরা। মাঠের চারিদিকে শুধু ছত্রাকনাশক প্রয়োগের দৃশ্য।
গত বছর মৌসুমের শুরুতে দাম না পেলেও পরবর্তীতে আলুর ভাল দাম পাওয়ায় আশান্বিত হয় ওঠেন আলু উৎপাদনে বৃহত্তম জয়পুরহাট জেলার কৃষকরা। ফলে গত বছরের ক্ষতি পুশিয়ে অধিক লাভের আশায় এবার অধিকহারে আলু চাষে ঝাপিয়ে পড়েন জেলার আলু চাষিরা। জেলায় এবার ৪০ হাজার ৭৩৫ হেক্টর লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে আলুর চাষ হয়েছে ৪২ হাজার ৫৩০ হেক্টর জমিতে। যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১ হাজার ৭৯৫ হেক্টর বেশি।
উপজেলা ভিত্তিক এবার আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছিল জয়পুরহাট সদরে ৭২০০ হেক্টর, পাঁচবিবিতে ৭৩০০ হেক্টর, আক্কেলপুরে ৫২০০ হেক্টর, ক্ষেতলালে ৯০৩৫ হেক্টর ও কালাই উপজেলায় ১২০০০ হেক্টর জমি। আগাম জাতের আলুর চাষ হয়েছে ১০ হাজার ৮০০ হেক্টর জমিতে। জেলায় এবার আলু উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে প্রায় ৯ লাখ মেট্রিক টন। আলু লাগানোর পর মৌসুমের শুরু থেকে আবহাওয়া মোটামুটি ভাল থাকায় এবার বিঘা প্রতি ৪০ থেকে ৪৫ মন ফলন পেয়েছেন বলে জানান, কালাই উপজেলার কাজীপাড়া গ্রামের আলু চাষী আজাদ হোসেন। তিনি এবার ১ একর ১৬ শতাংশ জমিতে আগাম জাতের গ্যানোলা আলু চাষ করে লাভবান হয়েছেন বলে জানান তিনি।
বর্তমানে বাজারে আগাম জাতের আলু প্রতি মণ বিক্রি হচ্ছে ৮০০ থেকে ৮৫০ টাকা। এতে এক বিঘা জমির আলু বিক্রি করে লাভ হয়েছে প্রায় ১৫ থেকে ১৭ হাজার টাকা। এক বিঘা জমিতে এবার আলু উৎপাদনে খরচ পড়েছে প্রায় ১০/১২ হাজার টাকার মতো বলে জানান কৃষকরা। বাজারে বর্তমানে আগাম জাতের আলুতে ভরে গেছে। আমন ধানের দাম এবার ভাল ছিল আবার আলুর দাম ভাল পেয়ে কৃষকরা খুশি বলে জানালেন কোমরগ্রামের আলু চাষি মিঠু হোসেন।
জয়পুরহাট জেলা কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালক (শষ্য) আবু হোসেন জানান,এবার জয়পুরহাটে ৪২ হাজার ৫৩০ হেক্টর জমিতে আলু চাষ হয়েছে। যা অতিতের রেকর্ড ভঙ্গ করেছে। আলু ক্ষেতে ছত্রাকনাশকের ব্যবহার সম্পর্কে তিনি বলেন, ক্ষেত ভালো থাকলেও কৃষকরা লেটব্লাইট রোগের আক্রমণ থেকে রক্ষা পেতে ছত্রাকনাশক প্রয়োগ করছেন আলু ভাল রাখার জন্য। কৃষি বিভাগের মাঠ কর্মীরাও এ ব্যাপারে কৃষকদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিচ্ছেন এবং সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য ২০ হাজার লিফলেট বিতরণ করা হয়েছে বলে জানান আবু হোসেন।
সূত্রঃ বাসস / কৃপ্র/এম ইসলাম