কৃষি প্রতিক্ষণ ডেস্কঃ বৈরী আবহাওয়ার কারণে বগুড়ার ধুনট উপজেলায় যমুনা নদীর চরে চলতি মৌসুমে মসুর কালই চাষ করে কাঙ্ক্ষিত ফলন না পাওয়ায় কৃষকেরা দিশেহারা হয়ে পড়েছে। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার ভান্ডারবাড়ি ইউনিয়নের পূর্ব পাশ দিয়ে বহমান যমুনা নদী। প্রায় ৪২ বছর ধরে যমুনা নদী ভাঙনে ১৪টি গ্রাম নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। একদিকে নদী ভাঙছে, অন্যদিকে প্রায় ২২ বছর ধরে নদীর পূর্ব তীরে চর জেগে উঠছে। পশ্চিম তীরের কিছু মানুষ সেই চরে বসতি গড়েছে। এর মধ্যে বৈশাখী, রাধানগর ও বতুয়ারভিটা চরে প্রায় ৬০০ পরিবার বসতি গড়েছে।
এ ছাড়া নিউসারিয়াকান্দি, পুকুরিয়া, বরইতলি, ভুতবাড়ি চরে এখনও কেউ বসতি গড়ে তোলেনি। তবে এসব চরে নানা জাতের ফসল চাষাবাদ হয়। চলতি মৌসুমে চরের জমিতে সবচেয়ে বেশী চাষ হয়েছে মসুর কালই। কম খরচে অধিক লাভ হওয়ায় মসুর কালই চাষে ঝুকে পড়ে কৃষক। এখন পুরোদমে মসুর কালই তোলা ও মাড়াইয়ের কাজ চলছে।
কৃষি বিভাগের তথ্য অনুযায়ী চরে এ বছর প্রায় এক হাজার বিঘা জমিতে মসুর কালই চাষ হয়েছে। প্রতি বিঘায় উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৩ মন। কিন্তু চরাঞ্চলে বৃষ্টি না হওয়ায় চলতি মৌসুমে মসুর কালই চাষে ফলন বিপর্যয় হয়েছে। খরার কারণে তপ্ত বালুর বুকে অধিকাংশ ক্ষেতের মসুর কালই গাছ মরে গেছে। কোথাও আবার গাছ থাকলেও শীম ধরেনি।
নিউসারিয়াকান্দি চরের আব্দুল হান্নান জানান, এবার মসুর কালইয়ের ফলন ভাল হয়নি। গত বছরের ৩ বিঘা জমি থেকে ১২মন কালই উৎপাদন হয়েছিল। এবার একই পরিমাণ জমিতে মসুর কালই উৎপাদন হয়েছে মাত্র ৬ মন। আবহাওয়া অনুকূলে না থাকায় কালই উৎপাদ কম হয়েছে। এছাড়া একই চরের তাহেরা বানু, নুরু মিয়া, কোব্বাদ আলী, নান্নু মিয়া, শাহা আলীসহ অনেক কৃষক এবার মসুর কালই চাষ করে কাঙ্ক্ষিত ফলন থেকে বঞ্চিত হয়েছে।
ধুনট উপজেলা উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা আব্দুস ছোবাহান এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, চলতি মৌসুমে বৃষ্টি না হওয়ায় চরের জমিতে মসুর কালই চাষে কাঙ্ক্ষিত ফলন থেকে বঞ্চিত হয়েছে কৃষকেরা। তবে, চরের অন্যান্য ফসলের আশানুরূপ উৎপাদন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
সুত্রঃ ইত্তেফাক / কৃপ্র/এম ইসলাম