‘বহু বর্ষজীবী জাম্বু ঘাস চাষ পদ্ধতি’
কৃষি প্রতিক্ষণ ডেস্কঃ জাম্বু ঘাস গো-খাদ্য হিসেবে অতি উত্তম। দুগ্ধ উৎপাদনকারী এলাকা হিসেবে পরিচিত পাবনা, সিরাজগঞ্জ তথা চলনবিল অঞ্চলের কৃষকদের মাঝে দিন দিন জাম্বু ঘাসের আবাদ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। এই ঘাস চাষ যেমন সহজ, তেমনি উৎপাদনও ভালো হয়। এক শতাংশ জমিতে আবাদ করে ১০-১৫ মণ ঘাস পাওয়া যায়। সেখানে একটি গাভী সারাদিন খেতে পারে মাত্র ১২ থেকে ১৫ কেজি ঘাস।
জাম্বু ঘাস দেখতে সবুজ রং এর। জাম্বু ঘাস সাধারণত থেকে ৩ মিটার পর্যন্ত লম্বা হয়। এর পাতা ২.৫ থেকে ৪ সেন্টিমিটার চওড়া হয়। এই ঘাস খুব দ্রুত বৃদ্ধি পায়। এই ঘাসের বীজ ছোট, গোলাকার ও ধূসর রং এর হয়। জাম্বু ঘাসের বেশ কিছু প্রজাতি আছে। বিভিন্ন প্রজাতির গঠন ও বিভিন্ন। কিছু প্রজাতি দেখতে লতা সদৃশ। এক থেকে বহু বর্ষজীবী ঘাস, একবার লাগালে দুই থেকে আড়াই বছর পর্যন্ত উৎপন্ন হয়। জাম্বু ঘাসে প্রোটিন, নিউট্রাল ডিটারজেন্ট ফাইবার, এসিড ডিটারজেন্ট ফাইবার, এসিট ডিটারজেন্ট লিগনিন, হেমিসেলুলোজ, সেলুলোজ, অ্যাশ ইত্যাদি উপাদান বিদ্যামন।
রোপণের সময়ঃ- যে কোন সময় তবে উত্তম সময় হচ্ছে ফাল্গুন-চৈত্র মাস।
মাটির ধরনঃ- প্রায় সব মাটিতেই জন্মে। তবে উত্তম বেলে-দো-আঁশ মাটিতে ভাল।
জমি তৈরিঃ- উত্তমভাবে চাষ করে জমি তৈরি করতে হবে। বন্যা পরবর্তী কাদা মাটিতে লাগানো যেতে পারে।
কাটিং এর সংখ্যাঃ- ৭ কেজি প্রতি হেক্টর বা হেক্টর প্রতি ৩৫-৪০ হাজার কাটিং/মাথা।
কাটিং লাগানোর দূরত্বঃ- লাইন থেকে লাইন ৭০ সে. মি. কাটিং থেকে কাটিং- ৩৫ সে.মি.।
সার প্রয়োগঃ- গোবর/জৈব সার ১৫-২০ টন/হেক্টর।
জমি তৈরির সময়ঃ-
ইউরিয়া ৫০ কেজি প্রতি হেক্টর।
টিএসপি ৭০ কেজি প্রতি হেক্টর।
এম পি সার ৩০ কেজি্র প্রতি হেক্টর।
ঘাস লাগানোর ১ মাস পরঃ- ইউরিয়া ৫০-৭৫ কেজি প্রতি হেক্টর।
প্রতি কাটিং কাটার পরপরঃ- ইউরিয়া ৫০-৭৫ কেজি প্রতি হেক্টর।
সেচঃ- খরা মৌসুমে ১৫-২০ দিন পর পর।
ঘাস কাটার সময়
৩০-৪৫ দিন পর পর গ্রীষ্মকাল।
৪০-৫০ দিন পরপর শীতকালে। (সেচ সুবিধা সাপেক্ষে)
বছরে কতবার কাটা যায়ঃ- প্রথম বছর ৫-৬ বার, দ্বিতীয় বছর ৭-৮ বার ।
বছরে কাঁচা ঘাসের উৎপাদনঃ- ১০০-১৫০ টন/হেক্টর।
সংরক্ষণঃ- সাইলেজ তৈরি।
জাম্বু ঘাসে অনেক পুষ্টিগুন বিদ্যমান। জাম্বু ঘাস সব থেকে ভালো কাজ করে দুগ্ধবতী গাভীর দুধ উৎপাদন বৃদ্ধিতে। হজমের সমস্যা হলে বা পরিপাক তন্ত্রের সমস্যা জাম্বু ঘাস অনেক উপকারি।
কৃপ্র/এম ইসলাম