কৃষি প্রতিক্ষণ ডেস্কঃ রাজশাহীর বাঘায় কালবৈশাখীতে ঝড়ে এ অঞ্চলের প্রধান ফসল আমের ক্ষতি হয়েছে প্রায় দুই কোটি টাকা। কৃষি বিভাগ বলছে, রবি ও সোমবারের কালবৈশাখীতে ৫ শতাংশ আম ঝরে পড়েছে।আর ঝড়ে পড়া আম বিক্রি হচ্ছে এক থেকে দুই টাকা কেজি দরে তবে চাষিরা বলছেন, ক্ষতির পরিমাণ আরও বেশি। অনেকের ঘরের চালা উড়ে গেছে। সেই সঙ্গে ক্ষতি হয়েছে পাকা ধান। বিভিন্ন স্থানে তার ছিঁড়ে যাওয়ায় বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে বিদ্যুৎ। ঝড়ের পর অত্র এলাকায় এসে আম বাগান পর্যবেক্ষণ করেছেন রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক দেব দুলাল ঢালি।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, রবি ও সোমবার সন্ধ্যায় বাঘা-সহ অত্র অঞ্চলে কাল বৈশাখী ঝড় হানা দেয়। প্রায় ঘণ্টাব্যাপী তীব্র এই ঝড়ে এলাকায় ব্যাপক ফসলের ক্ষয়-ক্ষতি হয়। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয় অত্র অঞ্চলের প্রধান অর্থকড়ি ফসল আমের। এ ছাড়াও পাকা ধানের ব্যাপক ক্ষতি হয়। ঘণ্টাব্যাপী এ ঝড়ের পর বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে প্রায় ৩০ ঘণ্টা।
উপজেলার আমোদপুর গ্রামের আম চাষী আলী আকবর বলেন, পর-পর দু’দিন সন্ধ্যায় তীব্র ঝড়ে আম, ধান, সজনে ডাটা ও পাট-সহ বেশ কিছু সবজি জাতীয় ফসলের ক্ষতি হয়েছে। এর মধ্যে সব চেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে আমের। অনেকের গাছ ভেঙ্গে গেছে। ঝড়ের কারণে পোক্ত হয়ে আসা আমগুলো মাটিতে ঝরে পড়ে। তিনি বলেন, তাঁর প্রায় পাঁচটি বাগানে ব্যাপক পরিমাণ আমের ক্ষতি হয়েছে। এতে ওই এলাকার ব্যবসায়ীরাও অনেকেই আর্থিকভাবে ক্ষতির সম্মুক্ষিণ হবেন।
এদিকে ঝড়ের পর রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক দেব দুলাল ঢালি উপজেলার বেশ কিছু আম বাগান পর্যবেক্ষণ করে গেছেন। এ সময় তাঁর সাথে ছিলেন উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাবিনা বেগম। ক্ষতির পরিমাণ সম্পর্কে তিনি বলেন, তারা সোমবার উপজেলার বিভিন্ন অঞ্চল ঘুরে নিশ্চিত হয়েছেন গাছের আম প্রায় ৫ শতাংশ ঝরে গেছে। অনেকর গাছের ডাল এমনকি গাছ পর্যন্ত ভেঙে গেছে। এ কারণে আমের উৎপাদনও অনেকটায় কমে যাবে। তবে কতটা কমবে, নাকি ঘাটতি থাকবে, তা এখনই বলা যাচ্ছে না।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা সাবিনা বেগম জানান, এ অঞ্চলের আম চাষিরা প্রতি আম মৌসুমে প্রায় ২’শ কোটি টাকার আম বিক্রি করে নগদ অর্থ উপার্জন করে থাকেন। এখানে আম বাগান রয়েছে ৮ হাজার ৩৬৮ হেক্টর। এর মধ্যে চলতি বছরে কৃষি বিভাগ উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরেছে ৪১ হাজার ৮৪০ মেট্রিক টন। তবে হঠাৎ করে পর-পর তিন দিনের কালবৈশাখীর কারণে ঝরে গেছে কৃষক ও কৃষি কর্মকর্তাদের স্বপ্ন।
কৃপ্র/ এম ইসলাম