কৃষি প্রতিক্ষণ ডেস্কঃ ‘কোন কাজ নেই। কাজ ছাড়া ঘরেও মন বসে না। তাই পচা ধান কাটতে আইছি। যা পাব তাতেই সন্তুষ্ট।’ হাওরের তীরবর্তী অংশে ডুবে থাকা আধপাকা পচা ধান নিয়ে এখন এমনই স্বপ্ন দেখছেন চাষিদের। মৌলভীবাজার জেলার হাকালুকি, কাউয়াদিঘি ও হাইল হাওরের সর্বস্বান্ত কৃষক এখন পচা ধান সংগ্রহে ব্যস্ত। এ বছর হঠাৎ অতি বৃষ্টি ও আগাম বন্যায় পানিতে তলিয়ে যাওয়া বোরো ধান একেবারেই নষ্ট হলেও কিছুটা ধান মিলছে আধপাকা অবস্থায় ডুবে যাওয়া গাছ থেকে।
গত কয়েকদিন থেকে পানি কমেছে হাওরের তীরবর্তী কিছু এলাকায়। এতে অগ্রভাগ ভেসে উঠেছে পচা বোরো ধানের। এমন অবস্থায় হাওর পাড়ের কর্মহীন চাষি ঘরে বসে অলস সময় কাটাতে চান না। তাই কাজের টানে এখন তারা ছুটছেন ওই ধান সংগ্রহ করতে।
কৃষকরা নৌকা যোগে গলা পানি কিংবা কোমর পানি থেকে সংগ্রহ করছেন ধান। সারা দিন রোদে পুড়ে বৃষ্টিতে ভিজে ঘরে আনা ধান মাড়াই ও অন্যান্য প্রক্রিয়া শেষে প্রাপ্ত ধান দেখে শুধুই দুই চোখের পানি ফেলছেন। নৌকায় বোঝাই করা ধানে সবপ্রক্রিয়া শেষে হচ্ছে ৮ কিংবা ১০কেজি থাকছে। যেখানে বন্যায় ক্ষতি না হলে মিলত ১২০-১৩০ কেজি ধান।
ভুকশীমুল ইউনিয়নের গাজী কবির উদ্দিন (৫০), ছালামতপুরে নজির মিয়া (৬৫) কিন্তু সারা দিন পরিশ্রম করে যে ধান পান তা দিয়ে মন ভরে না। তারপরও যদি কিছু ধান সংগৃহীত হয় এমন আশায় তারা এখন পচা ধান কাটায় ব্যস্ত সময় পার করছেন। কিন্তু শতকরা দশটা ধানও ভালো নেই। তাদের মত অনেকেই রাস্তার উপর ধান মাড়াই ও পরিষ্কার করতে করতে বললেন, ‘ধান নেই কি খাব সারা বছর ?’
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ কার্যালয়ের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মো. শাহজান বলেন, ‘পচা গাছ থেকে সংগৃহীত ধান শুকিয়ে খাবার উপযোগী করে খেলে কোন সমস্যা হওয়ার কথা নয়। কেন না ধান পচেছে প্রাকৃতিক নিয়মে। ধান গাছ পচে গ্যাসের সৃষ্টি হয়েছে।’ তাই ওই ধান নিয়ে আশঙ্কার কোন কারণ নেই বলেও জানান তিনি।
সুত্রঃ ইত্তেফাক/ কৃপ্র/এম ইসলাম