কৃষি প্রতিক্ষণ ডেস্কঃ বোরোর বাম্পার ফলন ঘরে তুলেছেন কৃষকরা। আমন চাষের আগে তিন মাস জমি প্রায় পড়ে থাকবে। অনেকে হয়তো বর্ষাকালীন সবজি চাষ করবেন। কিন্তু বগুড়ার কৃষকরা সাধারণত কোনো জমিই ফেলে রাখেন না। এই তুমুল বর্ষার সময়টা তারা ব্যস্ত থাকেন আউশ ধান রোপণ ও পরিচর্যা নিয়ে। এ অঞ্চলবাসীর কম খরচে বাড়তি আয়ের স্বপ্ন দেখাচ্ছে এ আউশ ধান। সরকারও বীজ, সার ও সেচে প্রণোদনা দিচ্ছে।
বগুড়ার সারিয়াকান্দি, সোনাতলা, ধুনট, শেরপুর, নন্দীগ্রাম ও শিবগঞ্জ উপজেলায় চাষ হচ্ছে আউশ। বোরো ধান কাটার পর পরই এ ধান রোপণ করা হয়। আর আমন রোপণের আগে চাষীরা ফসল ঘরে তুলতে পারেন। বগুড়া কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর বলছে, ১২টি উপজেলার মধ্যে সারিয়াকান্দি, সোনাতলা, ধুনট, শেরপুর, নন্দীগ্রাম ও শিবগঞ্জ উপজেলায় আউশ ধান বেশি চাষ হয়। ইদানীং গাবতলী, কাহালু উপজেলাতেও কিছু কিছু চাষ হচ্ছে। বোরো কাটার পর আমন চাষের আগে প্রায় সাড়ে তিন মাস জমি পড়ে থাকে। অনেক কৃষক এ সময়টায় সবজির চাষ করেন। তবে বেশি সময়, শ্রম ও দক্ষতার প্রয়োজন হয় বলে বেশির ভাগ কৃষক সবজির চেয়ে আউশ চাষের দিকে ঝুঁকছেন। এ ধান চাষে খরচও কম। সবচেয়ে বেশি আউশ চাষ হচ্ছে সারিয়াকান্দি, ধুনট, নন্দীগ্রাম ও শেরপুর উপজেলায়।
সারিয়াকান্দি, সোনাতলা ও ধুনট এলাকায় এ ধানকে কৃষকরা বর্ষালিও বলেন। পানি সহনশীল বলেই এমন নাম। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর বলছে, গত বছর জেলায় আউশ চাষ হয়েছিল ১৯ হাজার ৫০০ হেক্টর। খোলাবাজারে চাল বিক্রি হয়েছে ৩০ থেকে ৩২ টাকা কেজিদরে। চলতি বছর লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ২১ হাজার ৬০০ হেক্টর জমিতে। হেক্টরপ্রতি চাল উত্পাদন ধরা হয়েছে ২ দশমিক ৮ মেট্রিক টন। সেই হিসাবে জেলায় আউশ চাল উত্পাদনের সম্ভাবনা রয়েছে ৬০ হাজার ৪৮০ টন।
চলতি মৌসুমে কৃষি বিভাগ থেকে সাধারণ আউশ ও নেরিকা জাতের আউশ চাষীদের মধ্যে ৭ হাজার ৭০০ জনকে প্রণোদনা দেয়া হয়েছে। সাধারণ আউশ চাষীদের বিঘাপ্রতি পাঁচ কেজি বীজ, ৪০ কেজি সার, সেচ বাবদ ৪০০ টাকা এবং নেরিকা জাতের আউশ চাষীদের আগাছা পরিষ্কারের জন্য ৪০০ টাকা করে প্রণোদনা দেয়া হয়েছে। বগুড়ার সোনাতলা ও ধুনট উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে বিস্তীর্ণ মাঠে আউশ চাষ হয়েছে। বোরো ধান ঘরে তোলার পর পরই আউশ চাষে মাঠে নেমেছেন কৃষকরা।
বগুড়া কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক প্রতুল চন্দ্র সরকার জানান, আউশ চাষে উত্সাহিত করতে সাধ্যমতো কৃষকদের প্রণোদনা দেয়া হয়েছে। চলতি বছর চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ২১ হাজার ৬০০ হেক্টর জমিতে। গত বছর অর্জিত হয়েছিল ১৯ হাজার ৫০০ হেক্টর। আবহাওয়া অনুকূল থাকলে জেলায় এবার আউশের ভালো ফলন হবে বলেই আশা করা হচ্ছে।
কৃপ্র/এম ইসলাম