কৃষি প্রতিক্ষণ ডেস্ক।।
কক্সবাজার সমুদ্র উপকূলে শুঁটকি উৎপাদন শুরু হয়েছে। এ কর্মযজ্ঞ চলবে আগামী বছরের জুন পর্যন্ত। এরই মধ্যে কাজে ফিরেছেন ৩৫ হাজারের বেশি শুঁটকি শ্রমিক। এবার দেশের চাহিদা মিটিয়ে প্রায় ৪০০ কোটি টাকার শুঁটকি রফতানির আশা করছেন ব্যবসায়ীরা। তথ্যসুত্র, দৈনিক বনিক বার্তা।
গত বুধবার সকালে কক্সবাজার পৌরসভার সমুদ্র উপকূলীয় এলাকা নাজিরারটেক, ফদনারডেইল, কুতুবদিয়াপাড়া ও সমিতিপাড়া ঘুরে দেখা গেছে, সাগরতীরে বিশাল এলাকাজুড়ে গড়ে ওঠা নাজিরারটেক শুঁটকি মহালে হাজার হাজার শ্রমিক কাজ করছেন। এদের মধ্যে কেউ ট্রলার থেকে তাজা মাছ কাঁধে করে মহালে নিয়ে আসছেন, অনেকে কাটা-বাছার পর সেই মাছ মাচায় রোদে শুকাচ্ছেন। অনেকে বস্তায় ভরছেন শুঁটকি মাছ।
নাজিরারটেক মত্স্য ব্যবসায়ী বহুমুখী সমবায় সমিতির সভাপতি আতিক উল্লাহ জানান, বৃষ্টির কারণে গত ১ জুলাই থেকে সব মহালে শুঁটকি উৎপাদন বন্ধ রাখা হয়। বৃষ্টি কমে যাওয়ায় চলতি সপ্তাহ থেকে আবারো পুরোদমে উৎপাদন শুরু হয়েছে।
তিনি বলেন, দেশের এ বৃহৎ শুঁটকি মহালে দিন দিন উৎপাদন বৃদ্ধি পাচ্ছে। গত বছরের তুলনায় এবার অর্ধশত শুঁটকি ব্যবসায়ী বেড়েছে। বেড়েছে শ্রমিকের সংখ্যাও। গত বছর প্রায় ৩০ হাজার শ্রমিক থাকলেও এবারে তা ৩৫ হাজার ছাড়িয়ে গেছে।
জেলার সাগরদ্বীপ সোনাদিয়ার মগচর এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, ৩০টির বেশি মহালে রোদে শুকানো হচ্ছে বিপুল পরিমাণ মাছ। এর মধ্যে লইট্যা ও ছুরিই বেশি। গভীর সাগর থেকে জেলেরা মাছ ধরে এখানে বিক্রি করছেন। মগচরের জেলে হামিদুল ইসলাম জানান, শুঁটকি উপযোগী মাছ ধরার জন্য ছোট ইঞ্জিনের ট্রলার রয়েছে পাঁচ শতাধিক। প্রতিদিন এসব ট্রলারে ১০-৩০ লাখ টাকার মাছ ধরা পড়ছে।
ব্যবসায়ী আব্দুল খালেক বলেন, চলতি মৌসুমের নতুন শুঁটকি হাটবাজারে বিক্রি হচ্ছে চড়া দামে। নতুন করে উৎপাদন শুরুর পর গত তিনদিনে ১০ মণ লইট্যা ও ছুরি শুঁটকি চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জে সরবরাহ করেছেন তিনি।
শুঁটকি মহালের মালিক কামাল উদ্দিন জানান, তার একটি মহালে এ পর্যন্ত প্রায় পাঁচ লাখ টাকার শুঁটকি উৎপাদন হয়েছে। কয়েক দিনের মধ্যে এ চরের আরো ২৯টি মহালে শুঁটকি উৎপাদনের ধুম পড়বে।
বর্তমানে জেলার প্রায় ছয় হাজার ট্রলার সাগরে গিয়ে ইলিশ, কোরাল, লাক্ষ্যা, চাপা, কামিলা, হাঙর, রূপচাঁদা, পোপা, রাঙাচকি, মাইট্যা, কালো চাঁদাসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছ ধরছেন। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য একটি অংশ উপকূলে শুঁটকি করা হচ্ছে। এসব তথ্য জানান কক্সবাজার ফিশিং বোট মালিক সমিতির সভাপতি মুজিবুর রহমান।
এদিকে শুঁটকির বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বর্তমানে প্রতি কেজি রূপচাঁদা ১২০০-২৫০০ টাকা, মাইট্যা ৮০০-১৫০০, কোরাল ১০০০-১৬০০, পোপা ৪০০-১২০০, চিংড়ি ১০০০-১৫০০, লইট্যা ৪৫০-৯০০, ছুরি ৭০০-১৪০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
কৃপ্র/এম ইসলাম