কৃষি প্রতিক্ষন ডেস্ক : মড়ক লেগেছে খুলনা অঞ্চলের বাগদা চিংড়ির ঘেরগুলোতে ।তাপমাত্রা হ্রাস-বৃদ্ধির কারণে বাগদা চিংড়ির মড়ক বন্ধ হচ্ছে না ।পাশাপাশি রয়েছে ভাইসারের প্রাদুর্ভাব। যা চিংড়ির উৎপাদনের চাহিদা পূরণের ওপর প্রভাব ফেলছে। উৎপাদন নিয়ে সংকটে রয়েছেন রফতানিকারকরা । মড়কের ফলে মৌসুমের শুরুতে তৃণমূল মৎস্য চাষীরাও উদ্বিগ্ন ও হতাশ হয়ে পড়েছেন। চাষ প্রক্রিয়া, পানি ও জমি ব্যবস্থাপনার কারণে ‘সাদা সোনা’খ্যাত চিংড়ি রফতানিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। ফলে চিংড়ি শিল্প ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। কয়রা উপজেলা মৎস্য অফিস সূত্রে জানা গেছে, উপজেলায় ৫ হাজার ৮শ’ হেক্টর জমিতে ৪ হাজার ২শ’টি চিংড়ি ঘের রয়েছে। এ ঘেরগুলোতে এবার চিংড়ি উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয় হেক্টর প্রতি ৩৫০ কেজি। মড়কের কারনে লক্ষ্যমাত্রা সম্ভব নাও হতে পারে ।
কয়রা উপজেলার হায়াতখালী এলাকার চিংড়ি চাষী আবু সাঈদ বিশ্বাস জানান, তার ৭০ বিঘা ও ২০ বিঘার দুটি চিংড়ি ঘের রয়েছে। দুটি ঘেরে সব মিলিয়ে তার খরচ প্রায় ১৩ লাখ টাকা। মৌসুমের শুরুতে ঘের দুটিতে দেড় লাখ টাকার চিংড়ি মাছ ধরতে পেরেছেন। এরপর থেকে পানির নিচে মরা চিংড়ি মাছ পাওয়া যাচ্ছে। কয়রা উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. আলাউদ্দিন হোসেন বলেন, হঠাৎ করে তাপমাত্রা হ্রাস-বৃদ্ধির কারণে ঘেরের মাটি ও পানির ওপর প্রভাব পড়তে শুরু করে। সেই সঙ্গে লবণাক্ততাও বেড়েছে। এতে চিংড়ির স্বাভাবিক পরিবেশে বিরূপ প্রভাব পড়ে। এর ফলে অধিকহারে চিংড়ি মারা যায়। মড়ক ঠেকাতে এ মুহূর্তে নিয়মিত ঘেরের পানি পরিবর্তন ও ঘেরে গভীরতা বাড়ানোর পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। তিনি বলেন, মৌসুমের শুরুতে চিংড়ি মারা যাওয়ায় লক্ষ্যমাত্রা পূরণে শংকা দেখা দিয়েছে । এখনও যে সময় আছে বড় ধরনের কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে চিংড়ি চাষীরা এ বিপর্যয় কাটিয়ে উঠতে পারবে বলেও আশা প্রকাশ করেন তিনি ।।
বাংলাদেশ ফ্রোজেন ফুডস এক্সপোর্টাস অ্যাসোসিয়েশনের (বিএফএফইএ) পরিচালক হুমায়ুন কবীর বলেন, এনবিআরের শর্ত সমস্যার পুরোপুরি সমাধান না হলেও বর্তমানে রফতানি কার্যক্রম চলছে। চিংড়ি চাষের জন্য ঘেরে কমপক্ষে ৫ ফুট গভীরতা প্রয়োজন। তা না হলে তাপমাত্রা চিংড়ির জন্য সহনশীল থাকে না। পানি পরিবর্তন করার ধারাবাহিকতা সঠিক করার মাধ্যমে ব্যবস্থাপনা গতিশীল করা প্রয়োজন। শুষ্ক মৌসুমে জমিতে চুনসহ জৈব সার সঠিক মাত্রায় প্রয়োগ এবং জমি ট্রিটমেন্ট ব্যবস্থা সঠিকভাবে করার ওপর জোর দেয়া হচ্ছে। এ জন্য প্রয়োজনে দরিদ্র কৃষকদের আর্থিক ও টেকনিক্যাল সাপোর্ট দেয়ার বিষয়টিও ভাবা হচ্ছে।
কৃপ্র/ কে, আহমেদ/এম,আই