কৃষি প্রতিক্ষণ ডেস্কঃ যেদিকে চোখ যাবে দেখা যাবে নৌকা। নৌকা আছে খালের মধ্যে পানিতে, ডাঙায়, রাস্তার ওপর এমনকি নৌকা চড়ে বসেছে নানা যানবাহনে। অবাক করার মতো দৃশ্য। আর এ দৃশ্যটি পিরোজপুরের স্বরূপকাঠি উপজেলার আটঘর গ্রামের নৌকা হাটের। পিরোজপুরের স্বরূপকাঠি একটি ব্যবসাসমৃদ্ধ উপজেলা। কিন্তু যোগাযোগ ব্যবস্থার ক্ষেত্রে নদ-নদী আর খাল-বিলের ওপর সম্পূর্ণ নির্ভরশীল। এ অঞ্চলের কৃষিজীবী মানুষের জীবন-জীবিকার প্রধান বাহনই নৌকা। ফলে ব্যবসাসমৃদ্ধ এ উপজেলা অনেক বছর আগে থেকেই নৌকার ওপর নির্ভরশীল। নৌকা ছাড়া এখানকার জীবনযাপন কল্পনাও করা যায় না।
নৌকার চাহিদা মেটাতে এ উপজেলায় অনেক আগে থেকে শুরু হয়েছে নৌকা কেনাবেচা। তবে এখন উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে বসে নৌকার বাজার। কোনো কোনো জায়গায় বড় পরিসরে এ নৌকার বেচাকেনা রূপ নিয়েছে নৌকা হাটে। সেখানে শুধু নানা ধরনের নৌকা ও বৈঠা বিক্রি হয়। তেমন একটি নৌকার হাট উপজেলার আটঘর। তবে নৌকার হাটে নৌকার বৈঠা কিনতে হবে আলাদা। তাই নৌকা হাটের পাশাপাশি গড়ে উঠেছে বৈঠার হাটও।
সপ্তাহের প্রতি শুক্রবার আটঘরে বসে এ নৌকার হাট। এ ছাড়া আদমকাঠি, জিন্দাকাঠি, বাস্তকাঠি, দুলহার, আতাপাড়া, কুড়িয়ানা ও গাগর এলাকায় ছোট আকারে নৌকার হাট বসে। বিভিন্ন এলাকা থেকে ক্রেতারা এসব হাট থেকে নৌকা কিনে বড় নৌকায় তুলে বা যানবাহনে করে নিয়ে যায়। আটঘরের নৌকা হাটের কারিগর, ক্রেতা-বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে যানা যায়, কীভাবে বা কত টাকা খরচ করে নৌকা তৈরি করে কত টাকায় বিক্রি হয়। আর কতই বা লাভ থাকে, তা দিয়ে কীভাবে চলছে তাদের জীবন জীবিকা।
হাটে দেখা পাওয়া এক নৌকার কারিগর ও বিক্রেতার সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, স্বাভাবিকভাবে একটি নৌকা তৈরিতে দুই দিন সময় লাগে। তবে ১১ হাতের নৌকা তৈরিতে সময় লাগে চার দিন। এটি তৈরিতে খরচ হয় ২ হাজার থেকে ২২০০ টাকা। হাটে এনে বিক্রি হয় ৩ হাজার থেকে ৩২০০ টাকায়। ৮-৯ হাতের ছোট নৌকা দুই দিনে বানানো যায়।