কৃষি প্রতিক্ষণ ডেস্কঃ খুলনার ঐতিহ্যবাহী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলনা সরকারি মহিলা কলেজ ক্যাম্পাসে বেশ কিছু নারকেলগাছ রয়েছে। এর একটির সঙ্গে জড়িয়ে আছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতি। ১৯৭২ সালে খুলনা সফরে এলে গাছটি লাগিয়েছিলেন তিনি। কলেজের প্রধান ফটক পার হলেই দেখা মিলবে নারকেলগাছটির। ৪৪ বছরে গাছটি অনেক বড় হয়েছে। ফলও ধরেছে। কালো পাথরের বেদি দিয়ে গাছটির চারপাশ ঘিরে রাখা হয়েছে ।পাশে রয়েছে বঙ্গবন্ধুর একটি আবক্ষ মূর্তি। খবর প্রথম আলো অনলাইনের
দীর্ঘদিন ধরে অযত্নে-অবহেলায় পড়ে ছিল নারকেলগাছটি। কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ সৈয়দা লুৎফুন নাহার জানতে পারেন, গাছটি বঙ্গবন্ধুর নিজ হাতে লাগানো। তিনি জানান, ২০১০ সালে কলেজের উপাধ্যক্ষ হিসেবে নিয়োগ পান তিনি। কলেজের ইতিহাস জানার জন্য ঘাঁটতে থাকেন বিভিন্ন নথিপত্র। পেয়ে যান কিছু সাদা-কালো ছবি। এসব ছবিতেই ফুটে ওঠে কলেজ ক্যাম্পাসে বঙ্গবন্ধুর নারকেলগাছ লাগানোর চিত্র। পরে কলেজের পুরোনো কর্মচারীদের সঙ্গে কথা বলে নারকেলগাছটি শনাক্ত করা হয়। ছবিগুলোতে তৎকালীন অধ্যক্ষ আনোয়ারা বেগম ও সাবেক রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানও রয়েছেন।
সৈয়দা লুৎফুন নাহার প্রথম আলোকে বলেন, পঁচাত্তর-পরবতী সময়ে বঙ্গবন্ধুর স্মৃতি সংরক্ষণ করে রাখা হয়নি। অযত্ন আর অবহেলায় ছবিগুলো অনেকটা নষ্ট হয়ে গেছে। ছবিগুলো পাওয়ার পর তা বাঁধাই করে রাখা হয়েছে।
খুলনার ইতিহাস ও ঐতিহ্য গবেষক অধ্যাপক গোলাম মোস্তফা সিন্দাইনি বলেন, ১৯৭২ সালে খুলনার সার্কিট হাউস মাঠে এক জনসভায় বক্তব্য দেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। কিন্তু খুলনায় তাঁর একমাত্র স্মৃতি বলতে আছে মহিলা কলেজে লাগানো ওই নারকেলগাছটিই।ওই সময় খুলনা মহিলা কলেজের ছাত্রীসংসদের ভিপি ছিলেন মলয়া রায়। দেশের বাইরে থাকায় তাঁর সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি। তবে তিনি কলেজের হীরকজয়ন্তী উপলক্ষে গত বছর প্রকাশিত স্মরণিকায় বঙ্গবন্ধুর সেই দিনের কথা তুলে ধরেছেন। তিনি লিখেছেন, ‘বঙ্গবন্ধু যেদিন মহিলা কলেজে আসেন, সেদিন ছিল ৩ জুলাই (১৯৭২)। … ওই সময় বঙ্গবন্ধুকে যাঁরা অভ্যর্থনা জানান, তাঁদের মধ্যে আমিও ছিলাম। তৎকালীন অধ্যক্ষ আনোয়ারা বেগমের কক্ষে তাঁর সঙ্গে পরিচয় হয়। এরপর আমার সঙ্গে কলেজে অনুষ্ঠিত ডিগ্রি পরীক্ষার কক্ষ পরিদর্শনে যান বঙ্গবন্ধু। সে সময় কয়েকটি কথা হয় তাঁর সঙ্গে। পরে নেমে এসে অফিসের সামনের ফাঁকা জায়গায় নিজ হাতে নারকেলগাছ লাগান তিনি।’
কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক মোহাম্মদ আবদুল আলীম বলেন, ‘২০১৪ সালে কলেজে যোগ দেওয়ার পর জানতে পারি, ওই নারকেলগাছটি বঙ্গবন্ধুর নিজ হাতে লাগানো। তারপর থেকেই এটার যত্ন নেওয়ার ব্যবস্থা করি। গাছটি দেখে কলেজের শিক্ষার্থীরা অনুপ্রাণিত হয়।’