কৃষি প্রতিক্ষণ ডেস্ক : মেহেরপুর জেলার খামারিরা এবার গরু বিক্রি করে লাভবান হচ্ছে। সীমান্তের কাটাতারের বেড়া আর চোরাচালানিরা যাতে বেড়া ডিঙ্গিয়ে ভারত থেকে গরু আনতে না পারে সেজন্য বিজিবি’র টহল জোরদার করা হয়েছে। বিগত বছরগুলোতে ভারতীয় গরুতে পশুহাটগুলো ভর্তি হয়ে যেত। এবার পশু হাটগুলোতে ভারতীয় গরু না থাকায় স্থানীয় গরুর খামরিরা ভাল দাম পাচ্ছে।বিভিন্ন জেলার ব্যাপারিরা মেহেরপুরের খামার থেকে গরু কিনে অন্যজেলায় বাজারজাত করছে। ভারতীয় গরু আসা বন্ধের কারণে স্থানীয় বাজারে গরুর দাম একটু চড়া। খবর বাসসের ।
মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার সীমান্তবর্তী কাজিপুর গ্রামের রহিম সরকার জানান, তিনটি গরু ভালদামে বিক্রি করতে পারবেন বলে আশা করছেন। গাংনী উপজেলার মালসাদহ গ্রামের রাফিয়া বেগম জানান- সংসারের কাজের ফাঁকে গরু- ছাগল পালন করেন। গত কয়েক বছরের মতো এবারও গত নভেম্বরে বামুন্দি পশুহাট থেকে দুটি এঁড়ে বাছুর কেনেন ৪৮ হাজার টাকায়। এই কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে একটি বিক্রি করেছেন ৪০ হাজার টাকা। ব্যাপারিরা অপরটিরে দাম বলেছে ৫০ হাজার হাজার টাকা। ৫৫ হাজার টাকা হলে বিক্রি করবেন বলে তিনি জানান। তিনি পশু চিকিৎসকদের পরামর্শ অনুযায়ী প্রাকৃতিক খাবার হিসেবে গমের ভূষি, খৈল, শুকনা খড়, চালের কুড়া ইত্যাদি খাইয়ে গরু পালন করেন।
গত শুক্রবার ছিল মেহেরপুরের সাপ্তাহিক পশুহাট। হাটে গিয়ে দেখা গেল ভারতীয় কোন গরু না ওঠায় ব্যাপারীরা বেশী দামে দেশী গরু কিনতে বাধ্য হচ্ছে। কুষ্টিয়ার গরু ব্যাপারি রফিকুল আলম জানান- মেহেরপুরের পশুহাটে এবার ভারতীয় কোন গরু না ওঠায় গরুর বাজার অনেক চড়া। চড়া দামেই তিনি চারটি গরু কিনেছেন। একই উচ্চতা ও ওজনের গরু (ভারতীয় হলে) আরও অনেক কম দামে কিনতে পারতেন বলে জানান তিনি।
সীমান্ত গ্রামবাসীরা জানায়, বিগত বছরগুলোতে কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে প্রতিদিন চোরাপথে শত শত গরু আসতো ভারত সরকারের নিষেধাজ্ঞা ও সীমান্ত হত্যা বন্ধে বিজিবির অনীহার কারণে বর্তমানে ভারতীয় গরু আসছে না বললেই চলে।
৪৭ বিজিবি‘র ব্যাটেলিয়ন কমান্ডার (অধিনায়ক) লে. কর্ণেল আমির মজিদ জানান সীমান্তে টহল ব্যবস্থা আরো জোরদার করা হয়েছে যাতে চোরাচালানীরা ভারতে প্রবেশ করে চোরা পথে কোন গরু নিয়ে আসতে না পারে। অপরাধ প্রতিরোধ ও অনাকাংক্ষিত ঘটনা এড়ানো সম্ভব হচ্ছে গরু চোরাচালান প্রতিরোধে। তাছাড়া করিডোর করেও গরু আমদানি বন্ধ রয়েছে।
জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা সুশান্ত হালদার জানান, ভারত থেকে গরু আসা বন্ধে স্থানীয় খামারিরা লাভবান হচ্ছে। এছাড়া পারিবারিকভাবে খামারিরা যে সংখ্যায় গবাদিপশু পালন করছেন তাতে ঈদে জেলার চাহিদা মিটিয়ে অন্যজেলার চাহিদা পূরণ করবে অনেকাংশে।
কৃপ্র/ কে আহমেদ/ এম ইসলাম