কৃষি প্রতিক্ষণ ডেস্কঃ নরসিংদী জেলার শিবপুর উপজেলার কুন্দার পাড়া, ব্রাক্ষন্দী ও খড়কমাড়া গ্রামে শীতকালীন শাকসবজির নার্সারী দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। আগাম শীতকালীন শাক-সবজির মধ্যে ফুলকপি, বাঁধাকপি, টমেটো, বেগুন, মরিচ, পেঁপেসহ বিভিন্ন রকমের চারা উৎপাদন করে থাকেন নার্সারির মালিকরা।
তিনটি গ্রামে ছোট বড় মিলে প্রায় ৩০টি নার্সারি রয়েছে। এই নার্সারিগুলোতে প্রায় ৫০ জন চাষী বীজতলা তৈরির কাজ করে থাকেন। চাষীরা বীজতলা তৈরির কাজ করে জুলাই থেকে ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত। পর্যায়ক্রমে দেশি ও হাইব্রিড জাতের বীজ থেকে চারা উৎপাদন করে বিক্রি করে থাকেন। নিজ উপজেলার কৃষকের চাহিদা মিটিয়ে আশপাশের জেলা ও উপজেলার বড় বড় কৃষক ও পাইকারী ব্যবসায়ীরা এখান থেকে চারা সংগ্রহ করে নিজ নিজ এলাকার চাষীদের নিকট বিক্রি করে থাকেন।
উপজেলার কুন্দার পাড়া এলাকার নার্সারি মালিক মোছলেউদ্দিন জানান, আমাদের স্থানীয় চাষীদের চাহিদা মিটিয়ে ও প্রচুর পরিমাণে চারা আশপাশের জেলায় সরবরাহ করা হয়ে থাকে। যে সব জেলায় শিবপুরের চারা সরবরাহ হয়ে থাকে, সেগুলো হলো- গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ, ময়মনসিংহ, কিশোরগঞ্জ, কুমিল্লা, ব্রাক্ষণবাড়িয়া, সিলেটের হবিগঞ্জ, মৌলবীবাজার ও সুনামগঞ্জ।
একই এলাকার আর এক নার্সারি মালিক মো. জাকির হোসেন বলেন, মায়েরা যেমন নবজাতকদের অনেক যত্ন করে লালন পালন করেন। ঠিক তেমনিভাবে বীজতলা তৈরি করতে আগাছা পরিষ্কার করা থেকে শুরু করে মাটিতে জৈব সার মিশিয়ে বীজ রোপন করে পলিথিন, বাঁশ, ও বেত দিয়ে সেট তৈরি করে। যা অতি বৃষ্টি ও রোদ থেকে রক্ষা পেতে সহায়তা করে।
উপজেলার খড়কমাড়া গ্রামের কৃষক ও নার্সারির মালিক দুলাল মিয়া জানান, আমি ৩ বিঘা জমিতে নার্সারির চারার আবাদ করেছি, আমাদের ১ বিঘা জমিতে বীজতলা তৈরি করতে প্রায় ১ লাখ টাকা খরচ হয়। আর ১ বিঘা জমির চারা বিক্রি করতে পর্যায়ক্রমে প্রায় ৪/৫ মাস সময় লাগে এবং এতে প্রায় ৩ লাখ টাকা বিক্রি করা সম্ভব। এতে করে সকল খরচ বাদ দিয়ে বিঘা প্রতি ২ লাখ টাকা আয় হয়।
এলাকার নার্সারি মালিকদের পক্ষে শওকত আলী বলেন, আমরা যে সময়টায় বীজতলা তৈরি করি তখন দেশে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ বেশী থাকে। ফলে বীজতলা বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে যায়। বীজতলা নষ্ট হয়ে গেলে মালিকরা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়ে। সে জন্য নার্সারি মালিকদের কথা বিবেচনা করে উপজেলা প্রশাসন যদি ড্রেনেজ ব্যবস্থা করে দেন তা হলে এ ক্ষতি থেকে রক্ষা পাবে নার্সারির মালিকরা।
শিবপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. নাজমুল কবির বলেন, শিবপুরের সবজির খ্যাতি রয়েছে সারাদেশে। শুধু সবজি নয়, সবজির চারা উৎপাদনেও নরসিংদী জেলাসহ আশপাশের ১০/১২ জেলার মধ্যে ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। সেই দিক মাথায় রেখে আমাদের কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে সাধ্যমতো সহায়তা করে আসছি। ভবিষ্যতেও এই সহায়তা অব্যাহত থাকবে।
সুত্রঃ ইত্তেফাক/ কৃপ্র/ এম ইসলাম