কৃষিবিদ ফরহাদ আহাম্মেদ: গাভী পালন করে যেখানে দুধ উৎপাদন করা হয় তাকে দুগ্ধ খামার বলে। খামারের সম্পদ, সময় ও শ্রমিকের সুষ্ঠু ব্যবহার করে চাহিদা মোতাবেক দুধ উৎপাদন করাই হচ্ছে দুগ্ধ খামার ব্যবস্থাপনা। অর্থাৎ দুগ্ধ খামারে লাভজনকভাবে দুধ উৎপাদন করার জন্য সুষ্ঠুভাবে কাজকর্ম করাই হচ্ছে দুগ্ধ খামার ব্যবস্থাপনা। দুগ্ধ খামারে প্রতিদিনের কাজ একটি পূর্ণাঙ্গ সক্রিয় জীবন চক্রের মত যা একটি সুনির্দিষ্ট নিয়মে সম্পাদন করতে হয়। যেমন প্রতিদিন সকালে গোশালা ও গাভীর শরীর পরিষ্কার করা, দুধ দোহনের আগে গাভীকে দানাদার খাদ্য দেয়া , দুধ দোহন করা, দুধ বিক্রি করা, গাভীকে নিয়মিত ঘাস ও খড় জাতীয় খাদ্য সরবরাহ করা, অসুস্থ গাভীকে পৃথক করে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা, জৈব নিরাপত্তা ব্যবস্থা করা, গরম হওয়া গাভীকে যথাসময়ে কৃত্রিম প্রজননের ব্যবস্থা করা, গাভী ও বাছুরের যত্ন নেয়া, গাভীকে পর্যাপ্ত পানি খাওয়ানো, আয়-ব্যয়ের হিসাব রাখা, নথিপত্র সংরক্ষণ রাখা, দুধ সংরক্ষণের ব্যবস্থা রাখা, শ্রমিক কর্মচারিদের সন্তুষ্ট রাখা, যে কোন সমস্যা দ্রুত সমাধান করা ইত্যাদি কাজের তদারকি বা ব্যবস্থাপনা করাই দুগ্ধ খামার ব্যবস্থাপনা। এ কাজগুলো ব্যবস্থাপনা করবেন ব্যবস্থাপক।
বাজারের চাহিদা মোতাবেক উচ্চমান সম্পন্ন দুধ ও দুগ্ধজাত পণ্য উৎপাদন করা দুগ্ধ খামারকে লাভজনক করে। বেশি দুধ উৎপাদনকারী উন্নত জাতের গাভী, খাদ্য ও সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা পর্যাপ্ত দুধ উৎপাদনে সহায়ক। দুগ্ধ খামারের জন্য প্রয়োজন সুন্দর পরিকল্পনা। সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার মাধ্যমেই পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা যায়।
দুগ্ধ খামারে ব্যবস্থাপনা সুষ্ঠু হলে ফলাফল নিম্নরূপঃ
১. পর্যাপ্ত গুণগতমান সম্পন্ন দুধ উৎপাদন হবে। ২. বাজারের চাহিদামত দুধ ও দুগ্ধজাত খাদ্য উৎপাদন হবে। ৩. সময়মত দুধ ও দুগ্ধজাত খাদ্য উৎপাদন হবে। ৪. উৎপাদন খরচ কম হবে। ৫. খামারে পুঁজি কম লাগবে। ৬. খামারে লাভ হবে। ৭. শ্রমিক কম লাগবে। ৮. গাভী ও বাছুর সুস্থ থাকবে। ৯. আয়-ব্যয়ের সঠিক হিসাব থাকবে। ১০. নথিপত্র সংরক্ষণ থাকবে। ১১. খামারের সমস্যা কম হবে। ১২. খামারের আয় বাড়বে। পুঁজি বা বিনিয়োগ দ্রুত ফেরত পাওয়া যাবে। ১৩. খামারের শ্রমিক ও কর্মচারি সন্তুষ্ট থাকবে। ১৪. ক্রেতারা সন্তুষ্ট থাকবে। ১৫. খামার ক্রমেই বড় হবে।
লেখক: কৃষি প্রাবন্ধিক,বঙ্গবন্ধু জাতীয় কৃষি পদক প্রাপ্ত, সম্পাদক- কৃষি প্রতিক্ষণ।
কৃপ্র/এম ইসলাম